ঢাকা ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এরশাদকে রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টিকে ১০০ আসন বিএনপির প্রস্তাব নিয়ে নেতা বেকায়দায়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:০৮:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৭
  • ৩০৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপি জোটে গেলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে রাষ্ট্রপতি ও তার পার্টিকে ১০০টি আসনে মনোনয়ন এবং সরকার গঠনে আনুপাতিক হারে মন্ত্রিত্বদানের প্রস্তাব নিয়ে জাপার এক নেতা দলের মধ্যে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। সিঙ্গাপুরে এরশাদ চিকিৎসায় যাওয়ার আগেই জাতীয় পার্টির ওই নেতাকে নির্বাচনমুখী বিএনপি থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

বিএনপি নেতৃত্ব মনে করে, সরকার থেকে এরশাদ বেরিয়ে তাদের সঙ্গে আসলে ভোট ও রাজনৈতিক ময়দানে আওয়ামী লীগ কার্যত একা হয়ে পড়বে। সেই লক্ষ্যে এরশাদকে ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি করা হবে, নির্বাচনে জাপাকে ১০০ আসন ছেড়ে দেওয়া হবে এবং মন্ত্রিসভায় আনুপাতির অংশীদারত্ব দেওয়া হবে- এমন প্রস্তাবই জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী এক নেতা এরশাদের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। এরশাদ সেটি গ্রহণ করেননি। ঘটনাটি সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগেই ঘটেছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন এককভাবে লড়বেন এই মনোভাব ব্যক্ত করে এরশাদ প্রস্তাবে সায় দেননি। এতে বিএনপির সাথে দূতিয়ালি করা ওই নেতা এতোটাই বিব্রতকরন অবস্থায় পড়েন যে, এরশাদ দেশে ফেরার দিন তিনি আর বিমানবন্দরেও যাননি। বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাতে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ নেতা এমপিরা গিয়েছিলেন। জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও জিয়াউদ্দীন বাবলু সস্ত্রীক এরশাদের সঙ্গেই দেশে ফিরেছেন।

জাতীয় নির্বাচন যখনই ঘনিয়ে আসে তখনই তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে এরশাদকে নিয়ে দুই পক্ষের টানাটানি ঘটে। ২০০৬ সালের শেষেও এমন রশি টানাটানিতে শেষ পর্যন্ত বিএনপি সরকারকে ফাঁকি দিয়ে এরশাদ উঠেছিলেন পল্টনে শেখ হাসিনার ১৪ দলের মঞ্চে। পল্টন উল্লাসে ফেটে পড়েছিল, ১৪ দল মহাজোটে পরিণত হয়েছিল। তাই নয় সেই নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মরহুম আবদুল জলিল ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার যে চুক্তিনামা করেছিলেন সেখানেও এরশাদকে রাষ্ট্রপতি করার অঙ্গীকার ছিলো। কিন্তু সেই নির্বাচন বাতিল ও ওয়ান ইলেভেন ঝড় বয়ে যাওয়ার পর ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, সেই নির্বাচনও বাতিল চুক্তিনামাও বাতিল। নির্বাচন মহাজোটগতভাবে করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেও এরশাদের ভাই জিএম কাদের মন্ত্রী হন। এরশাদ আর রাষ্ট্রপতি হতে পারেননি।

২০০৪ সালের ৫ জানুয়ারির বহুল বিতর্কিত নির্বাচন ঘিরেও দুই শিবিরের টানাপোড়েনের মধ্যে এরশাদ পড়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি সিএমএইচ এ ভর্তি হন। আর পার্টিকে রওশন এরশাদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জিয়াউদ্দীন বাবলুরা নির্বাচনে নিয়ে যান। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনেই জোট আর মহাজোটের হিসাব-নিকাশের খেলায় পড়ে মাঝখানে এরশাদ ও তার জাতীয় পার্টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৫ জানুয়ারির  নির্বাচনে এরশাদ যেভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন মাঝপথে বর্জন না করলে এখন সংসদে জাতীয় পার্টি প্রায় ৮০ জন সদস্য নিয়ে শক্তিশালী বিরোধী দল হতে পারতো। আর রওশন এরশাদের জায়গায় সাবেক রাষ্ট্রপতিই হতেন সংসদে বিরোধীদলের নেতা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

এরশাদকে রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টিকে ১০০ আসন বিএনপির প্রস্তাব নিয়ে নেতা বেকায়দায়

আপডেট টাইম : ০৭:০৮:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপি জোটে গেলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে রাষ্ট্রপতি ও তার পার্টিকে ১০০টি আসনে মনোনয়ন এবং সরকার গঠনে আনুপাতিক হারে মন্ত্রিত্বদানের প্রস্তাব নিয়ে জাপার এক নেতা দলের মধ্যে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। সিঙ্গাপুরে এরশাদ চিকিৎসায় যাওয়ার আগেই জাতীয় পার্টির ওই নেতাকে নির্বাচনমুখী বিএনপি থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

বিএনপি নেতৃত্ব মনে করে, সরকার থেকে এরশাদ বেরিয়ে তাদের সঙ্গে আসলে ভোট ও রাজনৈতিক ময়দানে আওয়ামী লীগ কার্যত একা হয়ে পড়বে। সেই লক্ষ্যে এরশাদকে ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি করা হবে, নির্বাচনে জাপাকে ১০০ আসন ছেড়ে দেওয়া হবে এবং মন্ত্রিসভায় আনুপাতির অংশীদারত্ব দেওয়া হবে- এমন প্রস্তাবই জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী এক নেতা এরশাদের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। এরশাদ সেটি গ্রহণ করেননি। ঘটনাটি সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগেই ঘটেছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন এককভাবে লড়বেন এই মনোভাব ব্যক্ত করে এরশাদ প্রস্তাবে সায় দেননি। এতে বিএনপির সাথে দূতিয়ালি করা ওই নেতা এতোটাই বিব্রতকরন অবস্থায় পড়েন যে, এরশাদ দেশে ফেরার দিন তিনি আর বিমানবন্দরেও যাননি। বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাতে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ নেতা এমপিরা গিয়েছিলেন। জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও জিয়াউদ্দীন বাবলু সস্ত্রীক এরশাদের সঙ্গেই দেশে ফিরেছেন।

জাতীয় নির্বাচন যখনই ঘনিয়ে আসে তখনই তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে এরশাদকে নিয়ে দুই পক্ষের টানাটানি ঘটে। ২০০৬ সালের শেষেও এমন রশি টানাটানিতে শেষ পর্যন্ত বিএনপি সরকারকে ফাঁকি দিয়ে এরশাদ উঠেছিলেন পল্টনে শেখ হাসিনার ১৪ দলের মঞ্চে। পল্টন উল্লাসে ফেটে পড়েছিল, ১৪ দল মহাজোটে পরিণত হয়েছিল। তাই নয় সেই নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মরহুম আবদুল জলিল ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার যে চুক্তিনামা করেছিলেন সেখানেও এরশাদকে রাষ্ট্রপতি করার অঙ্গীকার ছিলো। কিন্তু সেই নির্বাচন বাতিল ও ওয়ান ইলেভেন ঝড় বয়ে যাওয়ার পর ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, সেই নির্বাচনও বাতিল চুক্তিনামাও বাতিল। নির্বাচন মহাজোটগতভাবে করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেও এরশাদের ভাই জিএম কাদের মন্ত্রী হন। এরশাদ আর রাষ্ট্রপতি হতে পারেননি।

২০০৪ সালের ৫ জানুয়ারির বহুল বিতর্কিত নির্বাচন ঘিরেও দুই শিবিরের টানাপোড়েনের মধ্যে এরশাদ পড়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি সিএমএইচ এ ভর্তি হন। আর পার্টিকে রওশন এরশাদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জিয়াউদ্দীন বাবলুরা নির্বাচনে নিয়ে যান। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনেই জোট আর মহাজোটের হিসাব-নিকাশের খেলায় পড়ে মাঝখানে এরশাদ ও তার জাতীয় পার্টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৫ জানুয়ারির  নির্বাচনে এরশাদ যেভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন মাঝপথে বর্জন না করলে এখন সংসদে জাতীয় পার্টি প্রায় ৮০ জন সদস্য নিয়ে শক্তিশালী বিরোধী দল হতে পারতো। আর রওশন এরশাদের জায়গায় সাবেক রাষ্ট্রপতিই হতেন সংসদে বিরোধীদলের নেতা।